সন্ধ্যার পর পর একের পর বিএনপি নেতাদের আটক করার পর রাজধানীসহ সারা দেশে গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আর আতঙ্ক থেকেই বিএনপি নেতারা নিজেদের মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান।
সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৮ দলীয় জোটের পক্ষে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে ১০ নভেম্বর থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেন। আর এরপরই পুলিশ শুরু করে আটক অভিযান।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবন থেকে শুরু করে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয় রাতভর ঘিরে রাখে পুলিশ। শুরু করে নেতাদের বাসায় আটক অভিযান।
সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠান শেষে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের সামনে থেকে প্রথমে আটক করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে। এরপরই বিএনপির অপর নেতা এমকে আনোয়ার ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে আটক করে। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত সোয়া ১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আওয়াল মিন্টু ও ব্যক্তিগত সহকারী শিমুল বিশ্বাসকে আটক করা হয়।
এছাড়াও সাদেক হোসেন খোকা, ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জয়নুল আবদিন ফারুক ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমান সারওয়ারের বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু কোনো নেতাকে বাড়িতে পায়নি পুলিশ।
মূলত তিন নেতা আটক হওয়ার পরপরই এসব নেতা আত্মগোপনে চলে যান। গ্রেফতার আতঙ্কে তারা নিজেদের বাড়ি ছেড়ে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের বাসায় আশ্রয় নেন।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ডিসিসির কমিশনার বেগম মেহেরুন নেসা হকের ব্যক্তিগত ম্যানেজার সাইফ-উর কাজল বলেন, পুলিশ রাতে পল্লবীতে তাদের বাসা ঘিরে রাখে। বেশ কয়েকবার দরজা খোলার জন্য শব্দ করে তারা। কিন্তু দরজা না খোলায় তারা বাসার নিচে অবস্থান নেয়।
বিএনপির এক নেতা বলেন, শুক্রবার রাতে পুলিশ যেভাবে বিএনপি নেতাদের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে তা এর আগে কখনও করেনি। কেন্দ্রীয় নেতারা আটক হওয়ার পরপর অনেক নেতাই গা ঢাকা দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। সব মিলিয়ে শুক্রবার রাতটি বিএনপি নেতাদের জন্য ছিল আতঙ্কের।
