এইমাত্র পাওয়া খবর :
Home » , » টাইফুন হাইয়ানের আঘাতে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে

টাইফুন হাইয়ানের আঘাতে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে

Written By Unknown on ১০ নভেম্বর ২০১৩ | রবিবার, নভেম্বর ১০, ২০১৩

Search Engine Optimization

এ যাবৎকালে ফিলিপাইনের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন হাইয়ানে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বরে আশঙ্কা করছে স্থানীয় পুলিশ। শুক্রবার সকালে ঘণ্টায় ২৭৫ কিলোমিটার শক্তির ঝড়োহাওয়া নিয়ে এই দ্বীপরাষ্ট্রে আঘাত হানে ভয়াবহ এ ঝড়।

দ্বীপপুঞ্জের পুব থেকে পশ্চিমে যাওয়ার পথে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যায় হাইয়ান। এ সময় ৪৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় উপকূলীয় এলাকা। ভারী বৃষ্টিতে ভূমিধসও ঘটে।

লেইটি প্রদেশের গভর্নরের বরাত দিয়ে প্রাদেশিক পুলিশের প্রধান এলমার সোরিয়া বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, টাইফুনের আঘাতে কেবল পূর্বাঞ্চলেই অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।

প্রলয়ঙ্করী এ টাইফুনে ঘরছাড়া হয়েছে কয়েক লাখ লোক। বিস্তির্ণ এলাকা ঢেকে গেছে জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে উঠে আসা কাদা আর আবর্জনার নিচে। লেইটি প্রদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাকলোবান এলাকার প্রশাসক টেকসন লিমের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, কেবল তার শহরেই নিহতের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

পুলিশ প্রধান এলমার সোরিয়ার বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, টাইফুন হাইয়ান তার যাত্রাপথের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে গেছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে জলোচ্ছ্বাসে যুবে অথবা ধসে পড়া ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়ে।

ফিলিপাইন রেড ক্রসের সেক্রেটারি জেনারেল গেনডোলিন প্যাং জানান, ট্যাকলোবানে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃতদেহ পানিতে ভাসতে দেখা গেছে। মৃতদেহগুলো তীরে এনে গণনা শেষ হলে নিহতের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ট্যাকলোবানের বিধ্বস্ত জনপদ দেখে জাতিসংঘের দুর্যোগ মূল্যায়ন সমন্বয় দলের প্রধান সেবাস্তিয়ান রোডস স্ট্যাম্পা বলেন, “সর্বশেষ ভারত মহাসাগরে সুনামির পর এই মাত্রার ধ্বংসযজ্ঞ আমি দেখেছিলাম।”

২০০৪ সালের ভূমিকম্প ও তার প্রভাবে সৃষ্ট সুনামিতে ক্ষয়ক্ষতির তুলনা করে একথা বলেন তিনি। ফিলিপাইনের নৌবাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডের কর্মকর্তা জিম আরিস আলাগো বলেন, জলোচ্ছ্বাসে ট্যাকলোবান শহর প্রায় ভেসে যাওয়ায় বিমানবন্দরও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক এফ্রেন নাগরামা সিএনএনকে বলেন, বিমানবন্দরে ১৩ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার পানি উঠেছিল। তিনি বলেন, “এটা ছিল সুনামির মতো। বৃষ্টি, সাগরের পানি ও ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে আমরা বিমানবন্দরের জানালা দিয়ে পালিয়েছিলাম এবং প্রায় এক ঘণ্টা আমি একটি খুঁটি ধরে ছিলাম।”

ফিলিপাইনের জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার মুখপাত্র মেজর রে ব্যালিডো বলেন, ঝড়ের পর ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে এখনো ফেরি ও বিমান চলাচল শুরু না হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতায় কাঙ্ক্ষিত গতি আসছে না।

মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য কর্মকর্তাদের শুধু  রেডিওর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সেবুর বাসিন্দা লিনলিন গোলফান একটি টেলিভিশনকে বলেন,  “আমি কখনো ভাবিনি যে, ঝড়ো হাওয়া এতো শক্তিশালী হবে যাতে আমার ঘর ভেঙে পড়বে।”

৫ মাত্রার ‘সুপার টাইফুন’ হাইয়ান দুর্বল হয়ে শনিবার ৪ মাত্রার ঝড়ে পরিণত হয়েছে। অবশ্য দক্ষিণ চীন সাগর হয়ে ভিয়েতনামে আঘাত হানার পথে এটা আবারো শক্তি সঞ্চয় করতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন।

গত বছর মিন্দানাওয়ের দক্ষিণাঞ্চলে টাইফুন ভোপায় এক হাজার একশ’ মানুষ নিহত হওয়ার পাশাপাশি প্রায় একশ’ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়।




Share this post :
 
Auto Scroll Stop Scroll