রোববারের একতরফা জাতীয় নির্বাচন ঠেকাতে দেশের ৩৮ জেলায় ১১১টি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ভস্মীভূত হয় এসব কেন্দ্র। আগুনে পুড়ে যাওয়া এসব কেন্দ্রের সবগুলোই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনটির আংশিক আবার কোনটির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক।
এদিকে, লক্ষ্মীপুর ও গাইবান্ধায় ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে ভস্মীভূত করেছে দুর্বৃত্তরা।
যেসব জেলার এক বা একাধিক ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, ফেনী, নরসিংদী, নীলফামারী, বরিশাল, ঝিনাইদহ, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, লক্ষ্মীপুর, রংপুর, কুষ্টিয়া, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর, খুলনা, রাজশাহী, বগুড়া, ভোলা, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, বাগেরহাট, পিরোজপুর, যশোর, পাবনা, পটুয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বরগুনা, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, কুড়িগ্রাম, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ।
ঢাকা : শনিবার ভোর ৬টায় রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে হরতাল সমর্থকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দক্ষিণখানের গাওনিয়া হাই স্কুলের ভোট কেন্দ্রে ভোর ৬টার সময় স্কুলের জানালা দিয়ে একটি কক্ষে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় কয়েকজন হরতাল সমর্থনকারী।
বরগুনা : বরগুনায় চারটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসব কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে বরগুনা সদরের পাঠাকাটা, কেওড়াবুনিয়া, ডউয়াতলা ও লেমুয়া মৃধাবাড়ি।
দিনাজপুর : দিনাজপুরের চেহেলগাজী উপজেলায় তিনটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা।
ফেনী : প্রহসনের নির্বাচন ঠেকাতে ফেনী-৩ সংসদীয় আসনের সোনাগাজি উপজেলার পাঁচটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রগুলো হচ্ছে উপজেলার চরদরবেশ নতুন বাজার কমিউনিটি হাসপাতাল, নাড়ু মিঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দারগাহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবাবপুর অন্নচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মতিগঞ্জ বাদাদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র।
যশোর: যশোরে ১০টি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে ভস্মীভূত কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে, যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া ও সদরের আংশিক) আসনের কয়েরখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আযমপুর দাখিল মাদ্রাসায় ও বিজয়রামপুর ভোট কেন্দ্রে। এছাড়া মনিরামপুরের সাতটি কেন্দ্রে পেট্রোল বোমা মেরেছে দুর্বৃত্তরা।
ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের শৈলকুপা ও সদর উপজেলার তিনটি ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। কেন্দ্র তিনটি হলো শৈলকুপার ললিত ভুঁইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর উপজেলার বিষয়খালী ও মহারাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার একদল অজ্ঞাত সন্ত্রাসী ১০ ভোট কেন্দ্রে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, সোনাপুর, কাউলিভাঙ্গা, বদরপুর, সুন্দরা, ভ্রমপাড়া, রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কক্ষে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে সরকারি বই পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে লক্ষ্মীপুর-১ রামগঞ্জ আসনের মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়, পানিওয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কোমরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ব্যালট পেপার ছিনতাই করে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্র্বৃত্তরা। এ সময় সাত/আটটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এ সময় দুই পুলিশসহ ১০ জন আহত হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার ও ভোটের বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে প্রবেশ করে। এক ঘণ্টা পর ৫০/৬০ জনের ১৮ দলীয় জোটের কর্মী সমর্থক একত্রিত হয়ে ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সামগ্রী পুড়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাকাঁ গুলি ছুড়েছে। একই সময়ে পানিওয়ালা উচ্চ বিদ্যালয় ও কোমরতমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ব্যালট পেপার ছিনতাই করে অগ্নিসংযোগ করেছে ১৮ দলীয় জোটের কর্মীরা।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুবুল আলম জানান, ব্যালেট পেপার ছিনতাই ও ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কোনো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের অনুপযোগী হলে অন্যত্র কেন্দ্র স্থাপন করে ভোট নেয়া হবে।
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার মো. আবুল ফয়েজ জানান, দুটি কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনতাই করেছে। এ সময় পুলিশের এএসআই সাহাব উদ্দিন, কনস্টেবল ইমাম হোসেন আহত হন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুড়েছে।
ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের গৌরীপুরের একটি, গফরগাঁওয়ের চারটি ও ত্রিশালের একটি ভোট কেন্দ্রসহ তিনটি সংসদীয় এলাকার মোট ছয়টি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
নাটোর: নাটোরের একমাত্র নির্বাচনী এলাকা নাটোর-৩ সিংড়া আসনের চৌগ্রামের খিদিরপুর উচ্চবিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া রামানন্দ খাজুড়া কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিভিয়ে ফেলে।
নেত্রকোনা : নেত্রকোনার সদর উপজেলার চারটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার ভোর রাতে মনাং, চন্দনকান্দী, মদনপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার ভোট কেন্দ্রগুলোতে আগুন দেওয়া হয়।
নীলফামারী : নীলফমারীতে চারটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার গভীর রাতে জেলার ডোমার উপজেলার একাধিক ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
এসব কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে, ডোমার উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের বারবিশা গোবাচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডোমার সদর ইউনিয়নের দীঘলটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাদু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের বটতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পাবনা : পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার সামান্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বিদ্যালয়ের দু’টি কক্ষের বেশ কিছু চেয়ার-বেঞ্চ পুড়ে গেছে।
সামান্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফসার উদ্দিন জানান, সকালে দুর্বৃত্তরা বিদ্যালয়ের জানালা দিয়ে পেট্রোল ঢেলে দু’টি কক্ষে আগুন দেয়। আগুনে বিদ্যালয়ের দু’টি কক্ষের কয়েকটি চেয়ার ও বেঞ্চ পুড়ে যায়। এ সময় গ্রামবাসী দ্রুত বিদ্যালয়ে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
পিরোজপুর : পিরোজপুর-৩ মঠবাড়িয়া আসনের মিরুখালী ইউনিয়নের দেবীপুর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর মাদারবুনিয়ার ৬৪নং মধ্য নন্দিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এক তলা ভবনের স্কুলের সবগুলো জানালায় আগুনে পুড়ে যায়।
সিলেট : ভোটগ্রহণের মাত্র ৩০ ঘণ্টা আগে সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনের জৈন্তাপুর উপজেলার দু’টি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে এ আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রগুলো হলো: জৈন্তাপুর থানা থেকে প্রায় ৩০০ গজ দূরে উপজেলা সদরের জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চারিকাটা ইউনিয়নের তুবাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে দু’টি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকাল ৯টার দিকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এর মধ্যে ধর্মপাশা উপজেলার সেলরশ ইউনিয়নের সরিসাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কেন্দ্রে এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার মন্নানগাঁও ইউনিয়নের রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দোয়ারিকা থানার ওসি আশেক সুজা মামুন এবং ধর্মপাশা থানার ওসি বায়েস আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে চারটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে ভোট কেন্দ্র তিনটির দরজা ও একটির বিদ্যালয় কক্ষ পুড়ে গেছে। শনিবার রাতে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) ও টাঙ্গাইল-২ এ (গোপালপুর-ভুঞাপুর) এই আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ঢেলি করটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও এইচ এম ইনস্টিটিউট স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের দু’টি কক্ষের দরজায় দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের গোপালপুর উপজেলা মাহমুদপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের একটি কক্ষের দরজায় আগুন লাগায় দুর্বৃত্তরা।
মানিকগঞ্জ: গতকাল গভীর রাতে শিবালয় উপজেলায় নিহালপুর-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বিদ্যালয় দু’টির টিনের বেড়া ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, নির্বাচনে নাশকতা করতে বিএনপি-জামায়াত এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
শেরপুর: সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের গনুইঘরোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তারাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কাচীরখামার ইউনিয়নের কাজীরখামার উচ্চবিদ্যালয়ে গতকাল রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়।
রাজশাহী: চারঘাটের সারদা সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, সারদা উচ্চবিদ্যালয়, শলুয়া ডিগ্রি কলেজ ও কালাবিপাড়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গতকাল দিবাগত রাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসব প্রতিষ্ঠান কাল রোববার ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কথা। এছাড়া রাজশাহী নগরে একটি ট্রাক ও চেতনা-৭১ কার্যালয়েও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
নগরের রাজপাড়া থানার ওসি এ বি এম রেজাউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বগুড়া: বগুড়ার পাঁচটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শাজাহানপুর উপজেলার শহীদ জিয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ইউএনও আবদুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলার বুরোইল ইউনিয়নের রিধইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে শুক্রবার দিবাগত রাতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
কাহালু উপজেলার কল্লাপড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রাত ১১টার পর গাবতলী উপজেলার নাড়ুমালা ইউনিয়নের মধ্যকাতুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কাগইল ইউনিয়নের চক কাগোইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। গাবতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লুত্ফর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গাইবান্ধা : রোববারের নির্বাচন প্রতিহত করতে শনিবার বিকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলার ৯টি কেন্দ্রের ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী সামগ্রী ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনটি ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপার ছিনতাই করে ভস্মীভূত করা হয়েছে। এছাড়া শুক্রবার রাত থেকে শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত জেলার ১০টি ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার রাতে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার আলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খোর্দ্দকোমরপুর বালক উচ্চ বিদ্যালয়, খোর্দ্দকোমরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নলডাঙ্গা উমেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, সদর উপজেলার শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ছোট নারিতাবাড়ী মাদ্রাসা, বালুঘরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পারগয়ড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী সামগ্রী ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা।
এর আগে শনিবার বিকালে নির্বাচনী কর্মকর্তারা সাদুল্যাপুর উপজেলার কুঞ্জ মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে রওনা দেয়। পথিমধ্যে ইদিলপুর নামক স্থানে দৃর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী সামগ্রী ছিনতাই করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় বাধা দিলে এসআই আব্দুল মোমিন ও দুই কনস্টেবলকে মারপিট করা হয়। এছাড়া একই উপজেলার তাজ নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইদিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দেয়া হয় এবং ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী সামগ্রী ছিনতাই করে ভস্মীভূত করা হয়।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় পলাশবাড়ী উপজেলার মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে, বিকালে গাইবান্ধা শহরের পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়া হলে স্থানীয় জনগণ দ্রুত আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। দুপুরে পলাশবাড়ি উপজেলার গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পার আমলাগাছী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এর আগে শুক্রবার রাতে থেকে বিশ্রামগাছী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
এছাড়া পলাশবাড়ী সদরের বঙ্গবন্ধু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে তারা। আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্রামগাছি ও সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার আনালেরতাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তিনদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

