পতিত স্বৈরশাসক এইচএম এরশাদের জাতীয় পার্টি কি আরেক দফা ভাঙনের মুখে পড়তে
যাচ্ছে? হয়তো রবিবারের মধ্যে এর একটি আংশিক উত্তরও পাওয়া যাবে।
কারণ এরশাদের পরেই দলটির সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক কাজী জাফর আহমদের শনিবারের বিবৃতির পর রাজনৈতিক অঙ্গনে এই আলোচনা এখন জোরেশোরে শুরু হয়েছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ একরতফা নির্বাচনে যোগদানের ঘোষণা দেয়ায় এরশাদকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে মন্তব্য করে নেতাকর্মীদের ‘প্রতিবাদী অবস্থান গ্রহণের’ আহ্বান জানিয়েছেন।
এর জবাবে এরশাদের পক্ষ থেকেও বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘কাজী জাফর আহমদ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ড করেছেন। তার বিষয়ে রবিবার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
এছাড়া কাজী জাফর আহমদ শিবিরের নেতা বলে পরিচিত ব্রিগেডিয়ার (অব.) হাসান, ফকির আশরাফ, এমএ হান্নান ও এএসএম আলমের বিরুদ্ধেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছেন এরশাদ।
ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এরশাদের একক সিদ্ধান্তে দল পরিচালনার কারণে ২৭ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি আরেক দফা ভাঙনের মুখে পড়তে যাচ্ছে।
আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে এ ভাঙন অনিবার্য। তবে শেষ মুহূর্তে বিএনপিসহ বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিলে হয়তো এ দফা রক্ষা পেতে পারে জাতীয় পার্টি।
শনিবারের বিবৃতিতেই কাজী জাফর এরশাদের ভূমিক্ষায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের নিয়ে স্পষ্ট করেই বিদ্রোহের কথা বলেছেন। আর এই বিদ্রোহ বলতে জাতীয় পার্টি ভেঙে যে আরেকটি দলের জন্ম দেয়ার ইঙ্গিত- তাও প্রায় স্পষ্ট।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা যদি নিশ্চুপ থাকি তবে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। আমি এই বিবৃতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির তৃণমূল পর্যায়ের সকল নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি- আপনারা জাতীয় পার্টির মধ্যে থাকা সরকারের অনুগত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী অবস্থান গ্রহণ করুন।’
বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ এবং চিকিৎসাধীন এই নেতা বলেন, পার্টির অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য, এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম-মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে পরবর্তীতে সাংবাদিক সম্মেলন করে পরবর্তী কার্যক্রমের দিক নির্দেশনা দেয়া হবে।
জাতীয় পার্টির ভাঙন নুতন কিছু নয়, এর আগেও হয়েছে। ২০০০ সালে জাতীয় পার্টি ভেঙে তিন খণ্ড হয়ে যায়। এর এক খণ্ডের মালিক হন সাবেক মন্ত্রী আনোয়ান হোসেন মঞ্জু এবং অপর অংশের প্রধান হন প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জু।
এর মধ্যে আনোয়ান হোসেন মঞ্জুর দলের নাম রাখা হয় জাতীয় পার্টি জেপি এবং নাজিউর রহমান মঞ্জু দলের নাম হয় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)। আদালতে দীর্ঘ লড়াইয়ে মূল জাতীয় পার্টির মালিকানা অবশ্য এরশাদের হাতেই থেকে যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৮৬ সালে এরশাদ বিএনপির ১৭ দফার আদলে ১৯ দফার ভিত্তিতে জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার দলের রাজনৈতিক দর্শন ছিল অনেকটাই বিএনপির কার্বন কপি। ফলে মূলত বাংলাদেশি জাতীয়বাদে বিশ্বাসী, ইসলাম-ধর্মপ্রাণ, ভারতবিরোধী জনগণই জাতীয় পার্টির ভোটার। বিএনপির ভোটারাও অনেকটা এমনই মনসতত্ত্বের।
কিন্তু এরশাদ সব সমই হেঁটেছেন এই ধারার বিপরীতে। তিনি যেমন ভারতের আর্শিবাদ পেতে উদগ্রীব থাকেন তেমনি চূড়ান্তভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধাই যেন তার নিয়তি।
বারবার বহু নাটক করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করারই তার রাজনৈতিক কৌশল। এরশাদের এই কৌশলে জাতীয় পার্টির ভোটাররা দিনদিনই এই দলটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
রাজনৈতিক কৌশলে অতি ধূর্ত এরশাদ তার দলকে আলোচনায় এবং সংসদে ভালো অবস্থানে রাখতে পারলেও দলটির ভোট কমছে অবিশ্বাস্যহারে। সাম্প্রতিক দেশি-বিদেশি কয়েকটি জরিপেও এর প্রমাণ মিলেছে।
গত অক্টোবরে প্রথম আলো পরিচালিত জরিপে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক কয়েক মাসে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) যথেষ্ট পরিমাণে জনসমর্থন হারিয়েছে। ২০১২ সালের নভেম্বরে জাতীয় পার্টির প্রতি জনসমর্থন ছিল ১১ দশমিক ৮ শতাংশ, এখন নেমে এসেছে ৭ শতাংশে। তাদের হারিয়ে যাওয়া নিজস্ব জনসমর্থন প্রায় ৪১ শতাংশ।
কারণ এরশাদের পরেই দলটির সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক কাজী জাফর আহমদের শনিবারের বিবৃতির পর রাজনৈতিক অঙ্গনে এই আলোচনা এখন জোরেশোরে শুরু হয়েছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ একরতফা নির্বাচনে যোগদানের ঘোষণা দেয়ায় এরশাদকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে মন্তব্য করে নেতাকর্মীদের ‘প্রতিবাদী অবস্থান গ্রহণের’ আহ্বান জানিয়েছেন।
এর জবাবে এরশাদের পক্ষ থেকেও বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘কাজী জাফর আহমদ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ড করেছেন। তার বিষয়ে রবিবার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
এছাড়া কাজী জাফর আহমদ শিবিরের নেতা বলে পরিচিত ব্রিগেডিয়ার (অব.) হাসান, ফকির আশরাফ, এমএ হান্নান ও এএসএম আলমের বিরুদ্ধেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছেন এরশাদ।
ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এরশাদের একক সিদ্ধান্তে দল পরিচালনার কারণে ২৭ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি আরেক দফা ভাঙনের মুখে পড়তে যাচ্ছে।
আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে এ ভাঙন অনিবার্য। তবে শেষ মুহূর্তে বিএনপিসহ বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিলে হয়তো এ দফা রক্ষা পেতে পারে জাতীয় পার্টি।
শনিবারের বিবৃতিতেই কাজী জাফর এরশাদের ভূমিক্ষায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের নিয়ে স্পষ্ট করেই বিদ্রোহের কথা বলেছেন। আর এই বিদ্রোহ বলতে জাতীয় পার্টি ভেঙে যে আরেকটি দলের জন্ম দেয়ার ইঙ্গিত- তাও প্রায় স্পষ্ট।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা যদি নিশ্চুপ থাকি তবে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। আমি এই বিবৃতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির তৃণমূল পর্যায়ের সকল নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি- আপনারা জাতীয় পার্টির মধ্যে থাকা সরকারের অনুগত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী অবস্থান গ্রহণ করুন।’
বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ এবং চিকিৎসাধীন এই নেতা বলেন, পার্টির অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য, এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম-মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে পরবর্তীতে সাংবাদিক সম্মেলন করে পরবর্তী কার্যক্রমের দিক নির্দেশনা দেয়া হবে।
জাতীয় পার্টির ভাঙন নুতন কিছু নয়, এর আগেও হয়েছে। ২০০০ সালে জাতীয় পার্টি ভেঙে তিন খণ্ড হয়ে যায়। এর এক খণ্ডের মালিক হন সাবেক মন্ত্রী আনোয়ান হোসেন মঞ্জু এবং অপর অংশের প্রধান হন প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জু।
এর মধ্যে আনোয়ান হোসেন মঞ্জুর দলের নাম রাখা হয় জাতীয় পার্টি জেপি এবং নাজিউর রহমান মঞ্জু দলের নাম হয় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)। আদালতে দীর্ঘ লড়াইয়ে মূল জাতীয় পার্টির মালিকানা অবশ্য এরশাদের হাতেই থেকে যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৮৬ সালে এরশাদ বিএনপির ১৭ দফার আদলে ১৯ দফার ভিত্তিতে জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার দলের রাজনৈতিক দর্শন ছিল অনেকটাই বিএনপির কার্বন কপি। ফলে মূলত বাংলাদেশি জাতীয়বাদে বিশ্বাসী, ইসলাম-ধর্মপ্রাণ, ভারতবিরোধী জনগণই জাতীয় পার্টির ভোটার। বিএনপির ভোটারাও অনেকটা এমনই মনসতত্ত্বের।
কিন্তু এরশাদ সব সমই হেঁটেছেন এই ধারার বিপরীতে। তিনি যেমন ভারতের আর্শিবাদ পেতে উদগ্রীব থাকেন তেমনি চূড়ান্তভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধাই যেন তার নিয়তি।
বারবার বহু নাটক করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করারই তার রাজনৈতিক কৌশল। এরশাদের এই কৌশলে জাতীয় পার্টির ভোটাররা দিনদিনই এই দলটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
রাজনৈতিক কৌশলে অতি ধূর্ত এরশাদ তার দলকে আলোচনায় এবং সংসদে ভালো অবস্থানে রাখতে পারলেও দলটির ভোট কমছে অবিশ্বাস্যহারে। সাম্প্রতিক দেশি-বিদেশি কয়েকটি জরিপেও এর প্রমাণ মিলেছে।
গত অক্টোবরে প্রথম আলো পরিচালিত জরিপে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক কয়েক মাসে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) যথেষ্ট পরিমাণে জনসমর্থন হারিয়েছে। ২০১২ সালের নভেম্বরে জাতীয় পার্টির প্রতি জনসমর্থন ছিল ১১ দশমিক ৮ শতাংশ, এখন নেমে এসেছে ৭ শতাংশে। তাদের হারিয়ে যাওয়া নিজস্ব জনসমর্থন প্রায় ৪১ শতাংশ।

