এইমাত্র পাওয়া খবর :
Home » , » গণগ্রেপ্তার বন্ধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির আহ্বান

গণগ্রেপ্তার বন্ধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির আহ্বান

Written By Unknown on ০৯ জানুয়ারি ২০১৪ | বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ০৯, ২০১৪

Search Engine optimization
বাংলাদেশে নির্বাচনোত্তর গণগ্রেপ্তারে নির্বাচন আরো কলঙ্কিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে নিউ ইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

সংস্থাটি বলছে, আওয়ামী লীগ নিজেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক দল দাবি করলেও যেভাবে সমালোচকদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে তাতে গণতন্ত্রের কিছু নেই।

সংস্থাটি বাংলাদেশে গণগ্রেপ্তার ও ভিন্নমত দমন বন্ধ করে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার এক বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ এই আহ্বান জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকারকে বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও অন্যদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার দ্রুত বন্ধ করতে হবে। ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হওয়ার পর থেকে নতুন করে এই গণগ্রেফতার শুরু করেছে। বিতর্কিত এই নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য দেশ পর্যবেক্ষক পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।’

এতে বলা হয়, প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট এই নির্বাচন বর্জন করায় নির্বাচনের আগেই ডজন ডজন সম্ভবত শ’ শ’ বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিরোধী নেতা খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করা হয়। খালেদার সঙ্গে যোগাযোগে বাধা দিতে এবং কাউকে ভেতরে প্রবেশে কিংবা বাড়ি থেকে বের হতে না দিতে নিরাপত্তা বাহিনী বাড়ির চারিদিকে ব্যারিকেড তৈরি করে। কঠোর করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে যায় দলটির নেতাকর্মীরা।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ার পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘কয়েকটি বিরোধী দলের সহিংসতা বন্ধে কয়েকটি ক্ষেত্রে সরকার যথাযথভাবে কাজ করলেও ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা বন্ধ, মতবিরোধ কমাতে, ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে বিরোধীদের সহিংসতাকে কঠোরভাবে দমন করতে সরকার এই গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজেকে বাংলাদেশের প্রধান গণতান্ত্রিক দল হিসেবে দাবি করে, কিন্তু নিজের দলের সমালোচনা এভাবে কঠোরভাবে দমনপীড়নের মধ্যে গণতন্ত্রের কিছুই নেই।’

বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনী সহিংসতায় বাংলাদেশে কমপক্ষে ১৫০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে বিরোধী দলেরই লোকজনই বেশি। নির্বাচন কমিশন বলেছে, ভোট কেন্দ্রে আগুন ও সহিংসতার কারণে প্রায় ৫০০ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। তবে এসব সহিংসতায় বিরোধীদের দমনে আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও জড়িত ছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই দলটির অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দলটির সিনিয়র নেতারা বলছেন, মিথ্যা তথ্যের এফআইবারের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তারে বাসায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

এতে বলা হয়, বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে আক্রমণের অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। গণমাধ্যম সূত্র জানায়, ভোটের দিন সহিংসতায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা বন্ধে দুই দলের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে দুই দল ব্যর্থ হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। একতরফা নির্বাচনের জন্য অনেক দেশের সরকারও সমালোচনা করেছে। বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি এবং অন্যান্য দেশ সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে।

নির্বিচারে গ্রেপ্তার বন্ধ, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার, মতপ্রকাশ, সভা-সমাবেশের অধিকার এবং স্বাধীনভাবে নাগরিকদের চলাচলের অধিকারের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চাপ প্রয়োগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ জানিয়েছে হিউমান রাইটস ওয়াচ।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে, তারা বিরোধী দলকে সংলাপের জন্য স্বাগত জানায়। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের এই বিবৃতিকে গুরুত্ব সহকারে নেয়া যায় না।

ব্রাড অ্যাডামস বলেন, চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর করতে সব দলকে রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করতে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ বৃদ্ধি করতে হবে।



Share this post :
 
Auto Scroll Stop Scroll