একতরফা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৪ জেলায় পুলিশের গুলিতে ১৮
দলীয় জোটের ৬ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রংপুরে ২, নীলফামারীতে ২,
দিনাজপুর ও ফেনীতে ২ জন মারা যান।
শনিবার গভীর রাত থেকে রবিবার সকাল
পর্যন্ত বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন
ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন প্রতিরোধের চেষ্টা চালালে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে।
আমাদের প্রতিনিধির পাঠানো খবর :
রংপুর
: জেলার পীরগাছা দেওতি মেকুরা আলিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার ও
ব্যালট বাঙ ছিনতাইকালে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায়
গুলিতে ২ জন নিহত এবং ৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা জামায়াত ও শিবিরের কর্মী
ছিলেন।
রবিবার ভোরে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন
ভোটকেন্দ্রে থেকে ব্যালট পেপার ছিনতাই ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ সময়
শিবিরের হামলায় প্রিসাইডং অফিসার আসাদ ও আনসার সদস্য রফিকুল ইসলাম আহত
হয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে
প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নীলফামারী
: জেলার ২ উপজেলায় যৌথবাহিনীর গুলিতে ২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন-
জেলার জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের বালাপাড়া এলাকার হাচি মামুদের ছেলে
জামায়াতকর্মী মমতাজ আলী (৫৫) এবং ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের
ইছামুদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০)।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার
সকালে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল
ভোটকেন্দ্রের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ মিছিলকে লক্ষ্য করে
গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলে জামায়াতকর্মী মমতাজ মারা যান এবং ১০ কর্মী
আহত হন।
এদিকে শনিবার রাতে জেলার ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নে যৌথবাহিনীর গুলিতে এক জামায়াতকর্মী নিহত হয়েছেন।
জানা
যায়, ওই এলাকার খালিশা চাপানী ব্যাপারীটোলা আলিম মাদ্রাসায় রাতে হামলা
চালিয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে
এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। এ সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা জামায়াতকর্মী
গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
দিনাজপুর : জেলার সদর উপজেলার নশিপুর
ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও নির্বাচনী সরঞ্জামাদী ছিনিয়ে নেয়ার সময়
পুলিশের গুলিতে বাবুল হোসেন (৪৫) নামে এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী
ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত দেড়টার দিকে নশিপুর সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে হামলা চালান ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। এ
সময়ে তারা ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম ছিনতাই ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা
করলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে
গুলি চালালে বাবুল হোসেন মরা যান। নিহত বাবুল সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী
ইউনিয়নের বিএনপি নেতা ছিলেন।
দিনাজপুর সদর সার্কেল এএসপি আবু তারেক
জানান, ওই সংঘর্ষের সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ২ পুলিশ সদস্য ও কয়েকজন
আনসার সদস্য আহত হন। তাদের দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা
হয়েছে।
ফেনী : জেলার সোনাগাজী উপজেলায় ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়ার সময় পুলিশের গুলিতে যুবদলকর্মী জামশেদ আলম (২৫) নিহত এবং ২ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার সকাল ১০টার দিকে ফেনী-৩ আসনের সোনাগাজীতে উত্তর পরচান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এই ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে
ভোরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের সমর্থকরা ব্যালট পেপার ছিনতাই করে
নিয়ে যাওয়ায় এই আসনের অপর আরেকটি কেন্দ্র উত্তর-পশ্চিম চরদরবেশ প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

