গুঁড়া হলুদে ক্ষতিকর সীসার উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে
Written By Unknown on ১৫ নভেম্বর ২০১৩ | শুক্রবার, নভেম্বর ১৫, ২০১৩
রান্নার জন্য যে হলুদের গুঁড়া ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত সীসার উপস্থিতি পেয়েছেন গবেষকরা। যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনুষ্ঠিত ‘হলুদে সীসার উপস্থিতি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষক দলের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে বিভিন্ন ধরনের গুঁড়া মসলা এবং প্রক্রিয়াকৃত খাদ্য বাজারজাত করা হচ্ছে। পারিবারিক ব্যস্ততার কারণে এ সকল খাদ্য দ্রব্যের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসকল দ্রব্যে এবং মসলাপাতি প্রক্রিয়া ও বাজারজাতকরনের সময় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য এবং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এ সকল রাসায়নিক দ্রব্য এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির মধ্যে সু-স্বাস্থ্যের পরিপন্থি ও ক্ষতিকর বস্তুসমূহের পরীক্ষা করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে প্রস্তুতকারক, ব্যবসায়ী এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যারা খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রন এবং বাজারজাতকরণের সাথে সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন তারা।
গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে গবেষক ডা. মৈত্রী মজুমদার বলেন, মোট ১৮টি গুঁড়া হলুদের নমুনা পরীক্ষা করে তার মধ্যে ১৮টি নমুনাতেই সীসা পাওয়া যায় এবং ১২টি নমুনায় মাত্রাতিরিক্ত সীসার উপস্থিতি পাওয়া যায়। কিন্তু মাটির নমুনাতে খুবই অল্প পরিমান সীসা আছে যা সহনীয় মাত্রার মধ্যে। তবে তাদের দাবিকৃত তথ্য আংশিক বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে পুনরায় সিরাজদিখানে উক্ত শিশুদের ভেতর থেকে মোট ২৮জন শিশুর ১৫ জনের উচ্চ মাত্রার এবং ১৩ জনের রক্তে মাত্রাতিরিক্ত সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এদের ক্ষেত্রেও পূর্বের ন্যায় প্রশ্নপত্র পূরণ কর হয় এবং ১৮ বাড়ি থেকে রান্নার জন্য ব্যবহৃত চাল, ডাল, হলুদের গুড়া, মরিচের গুড়া, মাটি, শিশুর ঘরের ধূলা ইতাদি সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া যেসকল শিশুর বাবা কাঠ মিস্ত্রি এবং রংয়ের কাজ করেন এমন ৪ জনের দোকান থেকে রং এর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। উক্ত নমুনা গুলোর মধ্যে হলুদের গুঁড়া এবং মাটি হাভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ, হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করা হয়। এই সকল নমুনার মধ্যে হলুদের গুড়ার মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত সীসার উপস্থিতি পাওয়া যায়। যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
ডা. মৈত্রী মজুমদার বলেন, ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং হাভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ, হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ অংশ গ্রহণের মাধ্যমে বিগত ২০০০ সাল থেকে আর্সেনিক ও এর সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। উক্ত গবেষণার অংশ হিসেবে গত ২০১০ সাল থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলায় বাচ্চাদের রক্তে সীসার উপস্থিতি এবং এর উৎস সম্পর্কেও গবেষণা কার্যক্রম চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষক দলের মধ্যে অন্যদের মধ্যে ডা. খ্রীষ্টফার হাগ ডা. কুস কাপুর, ফারিসা ইসলাম, কিমবারলি চিন উপস্থিত ছিলেন।

